Sunday, October 13, 2013

statement -2 related to religion

নরেন্দ্রপুরে কোন ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয় না। যেটা দেওয়া হয়, সেটাকে বলে ভারতীয় সংস্কৃতি। আই সি বা ইন্ডিয়ান কালচার। যাতে ভারতীয় দর্শনের শিক্ষা দেওয়া হয়। ভারতীয় দর্শনের শিক্ষা না পেলে, এই ভারত বর্ষের ধারনাটাই অপূর্ন থেকে যায়। তাছারা দর্শন ব্যপারটাই এমন নিজের জীবনে কাজে না লাগালে, শুধু পড়ে, তার অস্তিত্ব দর্শন অসম্ভব।

  ধর্মের বাজে দিক অনেক-সেটা নিয়ে বাঙালীদের মধ্যে আমার থেকে বেশী কেও গত দশ বছরে লেখে নি । কিন্ত ধর্মের পাঠের মধ্যে ইতিহাস এবং সমাজবিজ্ঞানের যে ধারা আমরা দেখতে পাই, সেটাকে অস্বীকার করা কঠিন।

  নরেন্দ্রপুরে মহারাজদের কাছ থেকে যেটুকু দর্শন বা ধর্ম শিক্ষা পেয়েছি, সেই ব্যপারে আমি পজিটিভ। শুধু উনারা হিন্দু ধর্মকে বৈজ্ঞানিক বা বিজ্ঞান সম্মত বলে চালানোর চেষ্টা করতেন, যেটা সব ধর্মেই একটা অপপ্রচার।  এবং বিজ্ঞানের দর্শন নিয়ে ভুল ধারনা থাকার কারনে, লোকে এই ধরনের ধর্ম মার্কেটিং করে।

 এই একটা ব্যপার বাদ দিলে, ভারতীয় দর্শনের শিক্ষা যা পেয়েছি, আমার ব্যক্তিগত জীবনের জন্য আজো খুব গুরুত্বপূর্ন। চারিদিকে এত লোক দেখি যাদের আত্মঅহঙ্কার, ডিগ্রির অহঙ্কার, বানানের অহঙ্কার, রূপের অহঙ্কার, চাকরির অহঙ্কার, বুদ্ধির অহঙ্কার, আদর্শবাদের জন্য চরমপন্থা-এসব দেখে আমার মনে হয় উপনিষদের শিক্ষা আজো সমান ভাবে উপযোগী।  উপনিষদ গঙ্গা বলে চিন্ময় মিশন একটা সিরিয়াল করেছে। সবাইকে ওটা দেখতে অনুরোধ করি।  কিছু না হলেও নিজেদের অহঙ্কার নামানো এবং নোংরামো করার প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা যায়। জীবনটা এত ক্ষুদ্র-এত ক্ষণস্থায়ী-কি ভাবে কাদা মেখে, নর্দমার জলে সাঁতার কেটে?   এই অনন্ত মহাবিশ্বের এক ক্ষুদ্রতম গ্রহের ক্ষুদ্রতম প্রানীর ক্ষণিকের জীবন আমাদের। তার জন্য কেও যদি আই আইটির আর এম আই টির ডিগ্রী নিয়ে গর্ব করে-বা অনেক টাকা রোজকার করেছে বলে নিজেকে মহান মনে করে-বা অনেক জ্ঞান অর্জন করেছে বলে, জ্ঞানী মনে করে বা অন্যের জন্য অনেক কাজ করে বেড়ায় বলে, জাহির করে-এগুলো সবই হবে সেই অজ্ঞানতার পরিচয়।

  যা কিছু সামাজিক বিবর্তনের জন্য, নির্বাচিত হয়েছে, যার মধ্যে ধর্ম আছে, তার থেকে অবশ্যই শেখার আছে। বুদ্ধ, মহাবীর, কনফুসিয়াস, প্লেটো, উপনিষদ, মহাভারত,  কোরান, কার্ল মার্কস থেকে গুরু নানকের বানী-সর্বত্রই শেখার জন্য অনেক কিছু আছে।  আমি নাস্তিক এবং ধর্ম বিরোধি লেখক হলেও- জীবনটা আমার কাছে একটা যাত্রা। এক অর্নিদিষ্ট লক্ষ্যের জন্য যাত্রা-যেখানে পাথেয় বলতে প্রতিটা মুহুর্তে শিখে যাওয়া। ধর্মগ্রন্থ, মানুষ, ভুল-ঠিক কাজ-প্রতিমুহুর্তেই আমরা শিখে চলেছি। ফাইনাল বলে কিছু নেই। শুধু প্রতিটা মুহুর্তে শিখে যাও। কতটুকুই বা আমরা জানি যে বলতে পারি আমার শেখার কিছু নেই? আমি তীব্র লেনিন এবং স্টালিন বিরোধি-কিন্ত তাদের জীবন অধ্যয়ন করেও অনেক কিছু শিখেছি। যা নেহাত কাজে আসবে না রাজনীতিতে না নামলে। কিন্ত শিখতে ক্ষতি কি? কোন কিছুই বর্জনীয় না।

Tuesday, October 8, 2013

my statement

অনেকেই অনেক কিছু জয়দীপ বা আমার বিরুদ্ধে লিখে গেছে। আমি বেশী কিছু বলার প্রয়োজন দেখি নি-কারন মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ফালতু সময় নষ্ট করার ইচ্ছা আমার নেই। শুধু কিছু গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট জানিয়ে রাখি-যাতে আর বাজে কারুর সময় নষ্ট না হয়
      (১) হিয়া আমাদের সাথে কাজে জয়েন করে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সালে। তখন Zreyas technology তৈরী হয় নি। আমি আর জয়দীপ মিলে কাজ শুরু করেছিলাম, এরকম একটা ইলেক্ট্রনিক্স প্রোডাক্ট কোম্পানী তৈরী করা যায় কিনা। কিছু ক্লায়েন্ট আসছিল। তখনো আমরা কোন কোম্পানী তৈরী করি নি। হিয়াকে নেওয়া হয়েছিল কিছু প্রোডাক্ট রিকাওয়ারমেন্ট তৈরী করার জন্য। যেহেতু জ্রেয়াস টেকনোলজি বলে কিছু তৈরী হয় নি তখনো, ও টি এস এন এল এল সি, যেটা আমেরিকাতে আমার মার্কেটিং কোম্পানী, তার কনসাল্টান্ট হিসাবে পেপার ওয়ার্ক সাইন করে কাজ শুরু করে। সেখানে আমরা ভেবেছিলাম, নভেম্বরের মধ্যে ভারতে কোম্পানী তৈরী করে, এমপ্লয়মেন্ট লেটার দেওয়া যাবে। কিন্ত ভারতে কাজ অত সোজা না। অক্টবর মাসে রেজিস্ট্রেশন হলেও পেপার ওয়ার্ক সব জমা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স পেতে পেতে আমাদের ফেব্রুয়ারী মাস লেগে যায়।ফলে শুধু হিয়া, না, বাকি যারা কাজ করছিল, সবাই মার্চ মাস পর্যন্ত আমেরিকান কোম্পানীর কনসাল্টটান্ট হিসাবেই কাজ করেছে। এবং সেটার জন্য সবার সাথে চুক্তিপত্র ও হয়েছে। এপ্রিল মাসে থেকে সবাইকে ভারতের কোম্পানীর এম্পলয়মেন্ট লেটারে সাইন করানো হয়।

  কোনদিন ই কাউকে কোন পেপার ওয়ার্ক বা কনট্রাক্ট ছারা টাকা দেওয়া হয় নি। কারুর বেতন ও মারা হয় নি।

(২) হিয়ার শেষ মাসের কয়েক দিনের পাওনা আটকানোর কারন -আমাদের প্রজেন্ট ম্যানেজারের বক্তব্য অনুযায়ী হিয়া সঠিক কোড ট্রান্সফার করে নি। হিয়ার বক্তব্য সে ঠিক কোডই দিয়ে গেছে। এই বিবাদের জন্য ব্যাপারটা আটকে ছিল। ব্যপারটা এতদূর গড়ানোয়, আমি হিয়ার সাথে নিজে কথা বলে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছি। ওর ক্যারিয়ারের যাতে কোন ক্ষতি না হয়, সেটা আমি নিশ্চয় দেখব।

 (৩) যারা বলছেন হিয়ার এক বছর আমরা নষ্ট করেছি, তাদের জানিয়ে রাখি, হিয়া এই একবছরের মধ্যে দুমাস ছুটি নিয়ে গেট পরীক্ষা দিয়েছে। এবং ছুটি নিয়ে ইউরোপে এম এসের জন্য আবেদন করেছে। আমরা মোটেও আটকায়  নি বরং ওকে উৎসাহিতই করা হয়েছে।

(৪) তাছারা হিয়া যখন রিজাইন করে, আমি ওকে আমার ইঞ্জিনিয়ারং মার্কেটিং কোম্পানীতে একই মাইনেতে যোগ দিতে বলেছিলাম। ওর মার্কেটিং ভাল লাগে না বলে যোগ দেয় নি। সেটা ওর ব্যাপার। আমি ওইটুকুই করতে পারতাম। কিন্ত যাইহোক সেটা ওর ক্ষেত্রে হয়ত সমাধান ছিল না।

(৫) অনেকেই জয়দীপের আই আই টি দিল্লীর ডিগ্রীকে ভুয়ো বলেছে।  ডিগ্রী জালিয়াতি নিশ্চয় অসাধুতা। কিন এই ব্যাপারে জয়দীপই লোকজনকে জানাবে সে কি। যদি আমার পজিশনের প্রশ্ন আসে -তাহলে আমি এটাই বলব পৃথিবীর অধিকাংশ প্রযুক্তি উদ্যোগপতি সে বিল গেটস বা স্টিভ জবস হোক-সবাই ড্রপ আউট।
 আমি অনেক ডিগ্রিধারী দেখেছি। ডিগ্রী দিয়ে আন্তারপ্রেনিওর হয় না কেও। আন্তারপ্রেনিওরার অন্য ধরনের জন্ত যারা সকার ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত একটা জিনিস নিয়ে লেগে থাকতে পারে-সহজে হার মানে না। আমার এক আই আই টি, আই আই এম এর বন্ধু এখন একটি বড় হোটেল চেনের মার্কেটিং ম্যানেজার যার মালিক এক পাঞ্জাবী যে শুধু ভারতের ক্লাস ১২ পাশ এবং চাষীর ছেলে ছিল। উদ্যোগপতিদের জন্য ডিগ্রি এসেট না ল্যায়াবিলিটি। এটা আমার ব্যক্তিগত উপলদ্ধি। কেও রাজী নাও হতে পারেন। কারন যারা এখানে লিখছেন, তারা সুখী চাকরিজীবি। ক্লায়েন্টের দরজায় ধাক্কা মেরে মেরে চেক বার করা, ছমাস, একবছর ধরে ধর্না দিয়ে ঘুরে কাজ বার করার মতন কঠিন কাজ গুলি, বা জীবনের কঠিন দিক গুলি দেখেন নি। এটা বুঝতে চাকরি ছেরে মাঠে নেমে সংগ্রাম করতে হয়-যেটা আমি গত দুবছর ধরে করছি।

 শুধু জয়দীপ না, আমি আরো ৬ জন যুবক বাঙালী উদ্যোগপতির সাথে কাজ করছি।  বাঙালীর গড্ডালিকা প্রবাহের চাকরীর সহজ আশ্রয়ে না এসে, তারা যে কিছু করছে, তাতে কিছু ছেলে মেয়ে চাকরি পাচ্ছে তাদেরকে আমি কুর্নিশ করি-এবং তাদেরকে আমি আমার সীমিত ক্ষমতা দিয়ে সহায্য করে যাব।

(৬) আরেকটা কথা জানিয়ে রাখি। ভারত এবং আমেরিকাতে আমাদের কোম্পানীর ২০-৪০% মালিকানা ট্রেজারিতে আছে- যাতে ভাল কর্মীদের আমরা স্টক অপশন দিতে পারি।

(৭) আমি যা কিছু করেছি, তার সব কিছুই ঠিক না। ভুল থেকেই মানুষ শেখে। ভারতে কোন প্রতিষ্ঠিত চাকুরিজীবি স্টার্টাপে আসতেই চায় না। ফলে প্রথমে ভুল করে আমরা অনেক ফ্রেশার হায়ার করেছিলাম, এবং পরে যথারীতি বোঝা গেছে মডেল ভুল ছিল। ফলে পরের দিকে মডেল বদলিয়ে এখন অল্পকিছু প্রজেক্ট ম্যানেজার রেখে আমরা মূলত খুব প্রতিষ্ঠিত কনস্টাল্টান্ট দের দিয়েই কাজ করায়।

(৮) প্রথম বছরে জ্রেয়াস বেশ ভাল করেছে। সব থেকে বড় কথ মার্চ মাস থেকেই ক্যাশ পজিটিভে আছে। এটা হয়েছে আমাদের কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে। তার আগে মূলত আমি এবং স্যান সেনগুপ্ত এই কোম্পানীতে ইনভেস্ট করেছি।  এখন অনেক বড় বড় ক্লায়েন্ট ও এসেছে।  আগামী দিনে আরো ভাল হবে, সেটাই আশা রাখি।  তবে আমার মূল ব্যবসা অন্য বলে  এখানে আমি বেশী সময় দিতে পারি না। কিন্ত আমি আশাবাদি যে সবটাই একটা ভাল দিকে এগোচ্ছে।

  অনেকেই অনেক কিছু বলবে। বলাটা অনেক সহজ। সকাল সাতটে উঠে, রাত ১২টা পর্যন্ত্ কাজ করাটা সহজ না।

  পূজোর আগে আমি সবার কাছ থেকে এই আশীর্বাদই চাইব আমাদের ভুল হলে আমরা ক্ষমাপার্থী। ভুল হলে দেখিয়ে দিন। গালাগাল দেবেন না। আমি নিশ্চিত আমাদের যেসব ছেলে মেয়েরা ভারতে কাজ করছে, তারা নিশ্চয় একদিন দেখিয়ে দেবে তাদের ক্ষমতা।